নিউজ ডেস্কঃ
যখন ছাত্রত্ব শেষ করবে, চাকরি দরকার, আমার কাছে আসবে। এটা নেত্রী আমাকে বলে দিয়েছেন। এমন কিছু করবে না যাতে সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।‘তোমরা অপকর্মে লিপ্ত হবা না। টাকার দরকার হলে আমার কাছে এসো। ’ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এমন বক্তব্য রেখেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি আজ বুয়েট অডিটোরিয়ামে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সুপথে আনতে এমন বক্তব্য রেখেছেন।
আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠনটির বর্তমান নেতাকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে রাজধানীতে ওবায়দুল কাদেরের ওই বক্তব্যের পরই তাঁর উদ্দেশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের হামলায় পঙ্গু এক ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমান বাদশা চাকরি চেয়ে ফেসবুকে চিঠি লিখেছেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে বাদশা লিখেছেন ‘আমার একটা চাকরি পাওনা ছিল আওয়ামী লীগের কাছে’।
চিঠিতে ছাত্রলীগ করতে গিয়ে নিজের পঙ্গুত্ববরণের কথা তুলে ধরে সরকারি চাকরির লিখিত পরীক্ষায় পাশ করেও চাকরি না পাবার হতাশার কথা উঠে এসেছে। ঢাকা থেকে ৪শ’ কিলোমিটার দূরে ঠাকুরগাঁওয়ে বসে দেওয়া বাদশার ফেসবুক পোস্টটির দুঃখ বেদনার কথা স্পর্শ করেছে ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতাকর্মীকেই। অনেকেই ফেসবুকে বাদশার আবেদনটি শেয়ার করে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে বাদশা’র খোলা চিঠিটি ঠাকুরগাঁওয়ের খবর এর পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:
মাননীয় সাধারণ সম্পাদক,
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ,
কেন্দ্রিয় কমিটি
বিষয়ঃ চাকুরীর জন্য আবেদন,
জনাব,
যথাবিহিত সম্মান প্রদর্শন পূর্বক নিবেদন এই যে আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক একজন কর্মী ।। ২০০৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হবার পর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাঃবি শাখার একজন কর্মী হিসেবে সক্রিয় ছিলাম,২০১০ সালের ৮ ই ফেব্রুয়ারি জামাত শিবিরের অতর্কিত হামলায় আমার সহযোদ্ধা গনিত বিভাগের মেধাবী ছাত্র ফারুক হোসেন নিহত হন,আমার এবং ফিরোজ মোহাম্মদ আরিফুজ্জামানের হাত পায়ের রগ কেটে দেয় শিবির ক্যাডার রা,সেই সাথে বিভিন্ন ভাবে কুপিয়ে আহত করে আরো ১৫-২০ জন ছাত্রলীগ নেতা কর্মী কে..
আমি আমরা দীর্ঘ দিন মৃত্যুরর সাথে পাঞ্জা লড়ে কোন মতে বেচে যাই,মানে পঙ্গু হয়ে যাই..
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ এবং ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময় সেই সময়ে সাবেক মন্ত্রী সাহারা খাতুন,আফম রুহুল হক,শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ,প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজার রহমান ফিজার,সাবেক প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু,প্রয়াত মুজিবুর রহমান ফকির,বর্তমান প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সহ শতাধিক সংসদ সদস্য হাসপাতালে আমাদের দেখতে এসে সুচিকিৎসার পাশাপাশি কর্মসংস্থান এর আশ্বাস দেন…
তার পর কেটে গেছে সাড়ে সাত বছর,গত ২৪ মে সরকারী চাকুরীতে আবেদনের বয়স শেষ ও হয়ে গেছে..
রিটেনে টেকার পরও কেউ একটা চাকুরী দিতে পারেন নি,দেন নি..
আমার একটা চাকুরী পাওনা ছিলো আওয়ামী লীগের কাছে….
আজ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় আপনার বক্তব্যে আশাবাদী হলাম,আপনী বলেছেন চাকুরীর বয়স শেষ হয়ে গেলেও আপনি ছাত্রলীগ নেতা কর্মী দের চাকুরী দিবেন,
শুনতে পান কি মাননীয় সাধারণ সম্পাদক,
আমি বাংলা বিভাগে স্নাতক( সম্মান) সহ স্নাতকোত্তর পাশ……
চাকুরি না পেয়ে,বয়স শেষ হয়ে যাওয়াতে আমি এখন অন্যের জমিতে বর্গা চাষ করি.যা দিয়ে আমার স্ত্রী পুত্র বয়স্ক বাবা মায়ের খরচ বহন করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে.
অতএব জনাব সাধারণ সম্পাদকের কাছে পিয়ন/এমএলএসএস এর একটি চাকুরী চাচ্ছি,যে টা দিয়ে আমি আমার পরিবার পরিজন সহ খেয়ে পড়ে বেচে থাকার নিশ্চয়তা পাই..
আমার আশা এবং বিশ্বাস মাননীয় সাধারণ সম্পাদক দলের জন্য আমার ত্যাগ,নির্যাতিত হওয়া,পঙ্গু হওয়া,অবদান সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমার একটা সরকারী চাকুরীর ব্যবস্থা করবেন নয়তো
একবোতল বিষ উপহার দিবেন.
নিবেদক
মোঃ সাইফুর রহমান বাদশা,
সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা..