তারেক রহমান। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারপার্সন ও বর্তমানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। হত্যা-দুর্নীতিসহ একাধিক মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে এক যুগের বেশি সময় ধরে লন্ডনে নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন তিনি। সম্প্রতি লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশে আসার ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন তারেক রহমান। তারেকের দেশে আসার ইঙ্গিতের পর থেকেই দলের মধ্যে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। দলের কিছু নেতাকর্মী আশাবাদী হলেও অধিকাংশ নেতাকর্মীরাই মনে করছেন তিনি শুধু আশাই দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় তারেকের দেশে ফেরার সম্ভাবনাকে ক্ষীণ করে দেখছেন। প্রসঙ্গত এর আগেও একাধিকবার তারেক জিয়া দেশে ফেরার কথা বললেও তা বাস্তবে রূপ নেয়নি।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তারেক বলেছেন, ‘দেশে ফিরছি প্রস্তুতি নিন। আমি দেশে ফেরার ঘোষণা দিবো দুই সপ্তাহের মধ্যে। দেশে ফিরলে সারাদেশ থেকে যেন জনজাগরণ হয় সেটার প্রস্তুতি নিন এবং দলকে শক্তিশালী করুন।’ তারেকের এমন আচমকা দেশে ফেরার বার্তায় অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন, অনেকে হতবাকও হয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে যে, বিএনপিতে যে সাংগঠনিক দুর্বলতা, অন্তঃকোন্দল, মত বিরোধ তা দূর করতে এবং দলের তৃণমূলের মধ্যে যে হতাশা বিরাজ করছে সেই হতাশা কাটানোর জন্য এবং দলের কোন্দল মেটানোর জন্য তারেক আকস্মিকভাবে দেশে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে তারেক দেশে ফিরতে চাইলেও তার দেশে ফেরার ক্ষেত্রে আইনি বাধা রয়েছে বলেও মনে করছেন একাধিক কূটনৈতিক। তারেক জিয়া বর্তমানে রাজনৈতিক আশ্রয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন। ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী তারেকের বাংলাদেশী পাসপোর্ট ব্রিটিশ সরকারের কাছে জমা রাখতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফেরার জন্য তারেকের পাসপোর্ট ফেরত পেতে ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী নানারকম জটিলতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পাশাপাশি তারেক যেহেতু একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী, সেক্ষেত্রে তারেক দেশে আসা মাত্রই তাকে আইন অনুযায়ী গ্রেফতার হবার সম্ভাবনা প্রবল।
সকল পরিস্থিতি বিবেচনায় আপাতত তারেকের দেশে ফেরা কঠিন হবে বলে মনে করছেন অনেকে। এখন দেখার অপেক্ষা এতসব প্রতিকূল পরিবেশ বিবেচনায় নিয়ে দেশে আসার ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নেন তারেক রহমান।